পদ্মা সেতুকে ঘিরে ব্যাপক পরিবর্তনের আশা দক্ষিণ অঞ্চলে।
সেতুকে ঘিরে শরীয়তপুরসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলের পরিবহন খাতের পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক পরিবর্তনের আশা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে এই প্রথম ঢাকার সঙ্গে সরাসরি শরীয়তপুরের সড়ক যোগাযোগ হচ্ছে। উদ্বোধনের দিন থেকেই নতুন বাস চলাচলের জন্য এরই মধ্যে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন পরিবহন মালিকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শরীয়তপুর পৌর বাস টার্মিনালের দুই পাশে দুটি কারখানায় চলছে নতুন বাস নির্মাণের কর্মযজ্ঞ। ভলভো, অশোক লেল্যান্ড, টাটা কোম্পানির বাসের চেসিস কিনে বডি তৈরির কাজ করা হচ্ছে। শরীয়তপুর ছাড়াও ঢাকা ও সাভারে বাসের বডি প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে শরীয়তপুরে তৈরি করা বাসগুলো কতটা মানসম্মত হবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান স্থানীয় যাত্রীরা। তাঁরা জানান, শরীয়তপুরের আঞ্চলিক রুটে চলাচলকারী বাসগুলোর মান একদম নিম্নমানের। এর মধ্যে অধিকাংশই একদম চলাচলের অনুপযোগী। তাই ঢাকা-শরীয়তপুর রুটে মানসম্মত বাস চালু করার দাবি তাঁদের।
বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, কয়েকটি ব্যক্তিগত কোম্পানি শরীয়তপুর থেকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ সরাসরি বাস চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস, শরীয়তপুর পদ্মা ট্রাভেলস, শরীয়তপুর পরিবহন ও গ্লোরি পরিবহন। প্রতিটি কোম্পানি নতুন বাস আনার পরিকল্পনা করছে। তাদের মধ্যে পদ্মা ট্রাভেলস ও শরীয়তপুর পরিবহনের কয়েকটি বাস এরই মধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া ঘাট পর্যন্ত চলাচল করছে। কোম্পানিগুলো প্রাথমিকভাবে প্রস্তুত করছে ৩০০টি বাস, যার একেকটিতে ব্যয় হচ্ছে ৮০ লাখ থেকে ৯০ লাখ টাকা।
বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন থেকেই আমরা ঢাকার সঙ্গে সরাসরি বাস চালু হওয়ার আশা করছি। কয়েকটি পরিবহন এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে। ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কে যাদের রুট পারমিট আছে, শুধু তারাই বাস নামাতে পারবে।
ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন সমকাল ইউটিউব
শরীয়তপুর পদ্মা ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান ও নড়িয়া পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা এরই মধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত কয়েকটি বাস পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছি।
শরীয়তপুর পরিবহনের পরিচালক এরশাদুজ্জামান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে আমরা ঢাকা-শরীয়তপুর রুটে সরাসরি বাস চালু করব। আমাদের এসি ও নন-এসি দু’ধরনের বাস চলবে।
শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের পরিচালক খালেক পালোয়ান বলেন, সেতু চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে এই আশায় রয়েছি। তাই অনেক কষ্ট করে নতুন করে বিনিয়োগ করেছি।
শরীয়তপুর এলাকার আব্বাস কোতোয়াল বলেন, এতদিন শরীয়তপুর থেকে ঢাকা সরাসরি কোনো বাস ছিল না। নৌপথে ঢাকা যাতায়াতে দুর্ভোগ ছিল নিত্যসঙ্গী। সেতু চালু হলে দুর্ভোগ কমবে।
শিউলী বেগম নামের একজন বলেন, শরীয়তপুর থেকে ঢাকা যাতায়াতে অনেক যন্ত্রণা পোহাতে হয়। সেতু চালু হলে সবার জন্য সুবিধা হবে।
শরীয়তপুর শহর থেকে পদ্মা সেতু পর্যন্ত চার লেনের সংযোগ সড়কটি নির্মাণের কাজ চলছে। প্রকল্পটি ২০২৪ সালের ৩০ জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানা গেছে।
Leave a Reply