নেত্রকোনা প্রতিনিধি:
চলতি মৌসুমে সেচ নালায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় এবং জেলা জুড়ে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে বিপর্যস্ত নেত্রকোনার ইরি-বোরো চাষাবাদ। পৌর শহরসহ জেলার ১০টি উপজেলায় তীব্র শীতের মধ্যেও চলছে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিং। যে কারণে বিদ্যুতের অভাবে ইরি-বোরো মৌসুমে সেচ কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।
মৌসুমের শুরুতেই চাহিদামতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় কৃষকরা। ফলে বিলম্বিত হচ্ছে ইরি-বোরো আবাদ। কৃষকদের অভিযোগ দিন-রাত মিলে গ্রামাঞ্চলে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা, আর শহরাঞ্চলে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা থাকছে বিদ্যুতহীন। ফলে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না তারা। এ পরিস্থিতিতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে সেচ কাজ। এতে এবার ইরি-বোরো আবাদে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
বীজতলা তৈরির পর, ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন কৃষক। তবে, আবাদের জন্য পর্যাপ্ত সেচ সুবিধা পাচ্ছেন না তারা। তীব্র শীত উপেক্ষা করে, নেত্রকোনায় ইরি-বোরো আবাদ শুরু হয়েছে। তবে, উপজেলা গুলোতে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে, ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবি চাষিদের।
বারহাট্টা উপজেলার আসমা কৈলাটি গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিম ও কলমাকান্দা উপজেলায় গোতুরা গ্রামে কৃষক কাঞ্চন সরকার জানান, সারা দেশকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা করার পরও লোডশেডিংয়ের কারণে জেলার প্রায় সব গ্রামের কৃষকই বোরো আবাদ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। মধ্যরাতে অল্প বিদ্যুৎ থাকলেও দিনের বেলায় ২ ঘন্টাও থাকে না বললেই চলে। যেটুকু সময় পাওয়া যায় কে কার আগে জমিতে পানি দিবে তা নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়। সময়মতো আবাদ করতে না পারলে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
তারা বলেন, কৃষি উপকরণে দাম বৃদ্ধি ও দেরিতে আবাদের কারণে বিঘা প্রতি সেচ খরচ বেড়েছে ৫-৬ শত টাকা পর্যন্ত। দিন-রাত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পাওয়ায় আমরা বোরো জমিতে সেচ দিতে পারছি না, বিদ্যুৎ পাওয়ায় অপেক্ষায় সারাদিন জমিতে বসে থাকতে হচ্ছে। এ নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে বহুবার অভিযোগ করেছি। কিন্তু কোন সুরাহা হয় নাই।
নেত্রকোনার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী বিপ্লব কুমার সরকার জানান, আমরা যতটুকু বিদ্যুৎ সরবরাহ পাই, ততটুকুই বিতরণ করি। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম পাওয়ায় বাধ্য হয়ে আমাদের লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলার গ্রামাঞ্চল গুলোতে চাহিদার তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে পারছি।
তিনি বলেন, জাতীয় গ্রিড থেকে যেভাবে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে, সে ভাবেই ইরি-বোর চাষে কৃষকদের মাঝে তা বিতরণ করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতি সাময়িক, খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হবে। লোডশেডিংয়ের বিষয়ে ইতোমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর নেত্রকোনা জেলায় ইরি-বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে- ১লক্ষ ৮৫ হাজার ২ শত ৫০ হেক্টর জমিতে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নেত্রকোনা কার্যালয়ের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. নুরুজ্জামান বলেন, এবার সময়মতো বীজতলা তৈরি সম্পন্ন হয়েছে। জেলার কিছু কিছু এলাকায় কৃষকেরা ইতিমধ্যে বোরো ধান লাগানো শুরু করে দিয়েছেন। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বোরো ধান লাগানো যাবে। সময়মতো জমিতে সেচ দিতে না পারলে বোরোর ফসল উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য চাষিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ রাখতে পারলে এবারও অত্র এলাকায় বোরো আবাদে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।
order arimidex 1mg pill buy anastrozole 1mg online cheap anastrozole 1mg us